সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

ইমাম মালেক রহ. এর অমিয় বানী

ইমাম মালেক রহ. এর অমিয় বানী

১.ইমাম মালেক রহ.-এর পর দাদা হযরত আবু আমের রা. সাহাবী ছিলেন । তার দাদা মালেক ইবনে আবু আমের তাবেঈ আলেমগণের মধ্য হতে ছিলেন । যে কয়জন ব্যাক্তি হযরত উসমান রা. এর গোছল ও দাফনের কাজে অংশ নিয়েছিলেন তিনি তাদের মধ্য হতে ছিলেন । ইমাম মালেক রহ. এর পিতা ছিলেন ব্যবসায়ী । তবে চাচা আবু সুহাইল নাফে’ ছিলেন আলেমদের মধ্য হতে এবং মুয়াত্তায় তার রেওয়ায়েত রয়েছে । ইমাম মালেক রহ. কে ‘ইমামু দারিল হিজরা’ এবং ‘ইমামু আহলিল মদীনা’ ও বলা হয় ।আর এই বিষয় টি প্রসিদ্ধ যে ,হযরত আবু হুরায়রা রা. এর এক হাদীসে যে বিদগ্ধ আলেমের কথা বল হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য ইমাম মালেক ই । হাদীসটি মুয়াত্তা ইমাম মালেক , মাসনাদু আহমাদ , জামে তিরমিযী ও সুনানে নাসায়ীতে রয়েছে । এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন, সেই সময় অতি নিকটে যে লোকেরা নিজেদের বাহন ও উটে চড়ে দীরঘ সফর করে ইলমের সন্ধানে বের হবে । তখন তারা মদীনার আলেমের চেয়ে বড় আর কোন আলেম পাবে না ।
২.ইমাম মালেক রহ. তুলনামূলক ভাবে কিছুটা খাটো ছিলেন । মাথা ছিল বড় । গায়ের রং ছিল ধুসর । কান ছিল বড় । দাড়ি ঘন ছিল । মোচ রাখার অভ্যাস ছিল । বরং মোচ কামানোকে মাকরুহ মনে করতেন । একবার এক লোককে দেখলেন যে , সে তার মোচ এবং মাথার চুল উভয় কামিয়ে ফেলেছিল তখন তিনি তাকে বললেন, যদি সয়তান তোমাকে ধরে শাস্তি দিত তাহলে এটাই দিত যা তুমি নিজের সাথে করেছ । দাড়ি-মোচ সব গায়েব করে ফেলেছ । বি.দ্র: হাদীস শরীফেও মোচ কামানোর নির্দেশ দেয়া হয়নি বরং ছোট বা কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।
৩. ইমাম মালেক রহ. উন্নত পোশাক পরিধান করতেন এবং মূল্যবান সুগন্ধি ব্যাবহার করতেন । তিনি বলতেন, বিনয় ও তাকওয়া দীনের ক্ষেত্রে হওয়া চাই । বাহ্যিক পোষাক-আশাকের ক্ষেত্রে নয় । খাবারের মধ্যে গোশত এবং কলা প্রিয় ছিল । তিনি বলতেন, এই ফলে মাছি বসে না । গরমকালে ওঐ শরবত পছন্দ করতেন যার মধ্যে খেজুর মিশানো থাকত । আর শীত কালে পানির সাথে মধু মিশিয়ে পান করতেন । টীকা: অনেক উলামা ও মাশায়েখ উন্নত পোষাক এই জন্য পরিধান করেন যে, মানুষ তাদেরকে দেখে যেন ফকীর-মিসকিন ও পার্থনাকারী মনে না করে ।
৪.নিজের যুগের বৈরাগ্যবাদী এ দুনিয়া ত্যাগী বুযুর্গ আব্দুল্লাহ আল-ওমারী একবার ইমাম মালেক রহ. এর কাছে পত্র লিখেন । যার মধ্যে তিনি তাকে মানুষের সাথে মেলামেশা এবং দুনিয়া বিমুখতা ও ইবাদতের উপর উদ্বুদ্ধ করেছেন । তখন ইমাম মালেক রহ. এর জবাবে লিখেছেন, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা যেমনিভাবে বান্দাদের মাঝে রিযিক বন্টন করেছেন অনুরূপভাবে নেক আমলও বন্টন করে দিয়েছেন । কারও নামাজে এত তৌফিক হয় রোজার যা হয় না । কারও দান-সদকা করার বেশ তাওফীক হয় কিন্তু নফল রোজার তৌফিক হয় না ।কারও জিহাদের প্রতি এমন আগ্রহ থাকে, নফল নামাযের প্রতি যেমনটি থাকে না । আর দ্বীনি আমলের প্রচার ও প্রসার সমস্ত নেক আমলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত । আল্লাহ তাআলা আমাকে যে ইবাদতের তৌফিক দিয়েছন তাতে আমি সন্তুষ্ট আছি।আমার ধারণা যে, আমর এই ইবাদাত আপনার ইবাদতের চেয়ে কম মর্যাদার নয় । আর আমরা সবাই আল্লাহ কাছে প্রতিদান প্রত্যাশী । আল্লাহ তাআলা যাকে যেই নেক আমলের তৌফিক দিবেন সেটার উপর আমাদের সন্তুষ্ট থাকা ওয়াজিব।”
.......ওয়াস সালাম ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন